অল্প পুঁজিতে লাভজনক ব্যবসা শুরু করার দারুণ আইডিয়া

অল্প পুজিতে লাভজনক ব্যবসা শুরু করা আজকের সময়ে সত্যিই সম্ভব। তার জন্য আপনার প্রয়োজন  দক্ষতা, উদ্ভাবনী চিন্তা, সৃজনশক্তি আর কঠোর পরিশ্রম। সামান্য কিছু টাকায় আপনি ব্যবসা শুরু করতে চাইলে প্রথমেই চিহ্নিত করতে হবে আপনার কোন বিষয়ে আগ্রহ ও দক্ষতার রয়েছে। আপনার আগ্রহ ও দক্ষতা যে বিষয়ের উপর, সে বিষয়ে আপনার কাজের প্রতি চাহিদাও বেশি থাকবে।

যেহেতু এই সব অল্প পুঁজির ব্যবসায় বিনিয়োগ কম, তাই সত্যিকার অর্থে আপনি বিক্রি করবেন মূলত আপনার দক্ষতা আর শ্রম। তাই যে ব্যবসা শুরু করতে চান সেই ব্যবসার ক্ষেত্রে আপনার যথেষ্ট দক্ষতা ও চাহিদা না থাকলে লাভজনক ব্যবসা করা সম্ভব নয়। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক সল্প পুঁজিতে শুরু করা কিছু লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া।

পেজ সুচিপত্রঃ অল্প পুঁজিতে লাভজনক ব্যবসা শুরু করার দারুণ আইডিয়া

মাত্র ৫ হাজার টাকায় ১০টি লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া

মাত্র ৫ হাজার টাকায় ১০টি লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া শুনে আপনার মনে হতেই পারে এটা কি সত্যিই সম্ভব। জি সম্ভব, যদি আপনার মধ্যে উদ্ভাবনের চিন্তা, সৃজনশীল শক্তি ও কঠোর পরিশ্রম করার জন্য ক্ষমতা থাকে তাহলে সত্যিই সল্প পুঁজিতে লাভজনক ব্যবসা শুরু করা যায়। চলুন জেনে নেওয়া যাক এমন কিছু ব্যবসায় আইডিয়া যা আপনি শুরু করতে পারবেন অল্প পুঁজিতে।

খাবার হোম ডেলিভেরিঃ বর্তমান কর্মব্যস্ততার সময়ে বাসায় প্রতিদিন রান্না করার সুযোগ হয়ে উঠেনা। অফিস থেকে বা কর্মস্থল থেকে বাসায় আসার পর ক্লান্ত শরীর নিয়ে রান্না করতে ইচ্ছা ও করে না। আবার প্রতিদিন হোটেলের খাবারও খেতে চাই না বেশিরভাগ মানুষ। এইসব মানুষদের কাছে আপনি নিজ বাসায় পুষ্টিকর ও সুস্বাদু রান্না করে খাবার হোম ডেলিভেরির মাধ্যমে সময় মতো পৌঁছে দিতে পারলে ব্যবসার অভাব হবে না।

কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় এই ব্যবসার সুযোগ অনেক বেশি। শহরের বাইরে থেকে পড়তে আসা ছাত্র-ছাত্রীরা অনেকেই রোজকার খাবার রোজ রান্না করতে চাই না। সেক্ষেত্রে তারা নির্ভর করে খাবার হোম ডেলিভারির উপর। এছাড়া এমন অনেক ছোট পরিবার ও আছে যারা প্রতিদিনের খাবার প্রতিদিন তৈরি করতে চাইনা। তারা প্রতিদিনের খাবারের জন্য হোম ডেলিভেরির খাবারের উপর নির্ভর করে।

অনলাইনে শিক্ষা প্রদানঃ বর্তমান সময়ে ইন্টারনেটের ব্যবহার ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। আপনিও চাইলে এই ইন্টারনেটকে ব্যবহার করে আপনার ব্যবসা শুরু করতে পারেন। অনলাইনে আপনার পছন্দের বিষয়টি শিখিয়ে ঘরে বসেই ভালো রকমের আয় করা সম্ভব। বিষয়টি হতে পারে পড়াশোনা, ভাষা শিক্ষা ইত্যাদির উপর। আপনার দক্ষতা ও আগ্রহের ভিত্তিতে নির্ধারণ করতে পারেন শিক্ষা প্রদানের বিষয়।

নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল খুলে অল্প পুঁজিতে লাভজনক ব্যবসা শুরু করে আয় করতে পারবেন। এছাড়াও অনলাইনে শিক্ষকতার জন্য রয়েছে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম। যেখানে আপনার নাম রেজিস্টার করে খুব সহজেই শুরু করতে পারবেন অনলাইন শিক্ষকতা। এই ধরনের প্লাটফর্মে আপনার বিষয়ের উপর কোর্স আপলোড করেও শুরু করতে পারেন আপনার ব্যবসা।

বাসায় তৈরি বেকারি অনলাইন বিক্রিঃ বিভিন্ন ধরনের কেক ও কুকিস বানাতে ভালবাসেন, তাহলে সল্প পরিমাণ অর্থ নিয়ে শুরু করতে পারেন বেকারি ব্যবসা। বর্তমান সময়ে আত্মীয়-স্বজন বা বন্ধু-বান্ধবের জন্মদিন, অ্যানিভার্সারি, বিভিন্ন ধরনের পার্টি, নানা রকম অনুষ্ঠানে কেকের চাহিদা অনেক বেশি। এজন্য যারা ভাল মানের কেক তৈরি করে, কাস্টমার তাদের থেকেই বারবার কেক নিতে আগ্রহ পোষণ করে।

সতেজ, টাটকা ও ওভেন-ফ্রেশ বেকারি আইটেমের চাহিদা বর্তমান সময়ে ব্যাপক। আর অর্ডার করা বেকারি যদি আপনি একেবারে ক্রেতার চাহিদা মতো ঘরে পৌঁছে দিতে পারেন তাহলে তো কথায় নেই। কাস্টমার ধরে রাখার জন্য নিত্য নতুন রেসিপি চেষ্টা করুন, তৈরি করুন আপনার স্পেশালিটি। ৫ হাজার টাকায় শুরু করতে পারেন আপনি এই ব্যবসা। ঘরের ওভেনেই কেক বানিয়ে অনলাইনে বিক্রি করতে পারবেন।

ট্রাভেল এজেন্সিঃ আপনি যদি ভ্রমণ করতে ভালবাসেন, তাহলে ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবসা শুরু করার বিষয়ে ভাবতে পারেন। এই ব্যবসা শুরু করার জন্য আপনার খুব বেশি বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে না। আপনি সামান্য কিছু অল্প পরিমাণ অর্থ নিয়ে এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন। যদি নতুন উদ্যোক্ত হয়ে থাকেন, তবে এটি আপনার জন্য মজাদার, উত্তেজনাপূর্ণ ও লাভজনক ব্যবসা হবে। এছাড়াও এই ব্যবসার আয়ের পাশাপাশি ভ্রমণের সুবিধা গুলো উপভোগ করতে পারবেন।

বাংলাদেশে ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসা অনেক বড় শিল্প। সারাদেশে অনেক ট্রাভেল এজেন্সি ও এজেন্ট রয়েছে। গ্রাম এলাকা ও এই ব্যবসা শুরু হয়ে গেছে এটি দেশে প্রযুক্তি ও ইন্টারনেটের সরবরাহ ব্যবস্থার অগ্রগতির সুবিধায় অনেক গ্রাম্য এলাকায় এই ব্যবসা শুরু হয়েছে। আপনি প্রধান ব্যবসার পাশাপাশি ট্যুর প্যাকেজ, হোটেলে থাকার ব্যবস্থা, গাড়ি ভাড়া ইত্যাদি ব্যবসা করতে পারেন।

ট্যুর গাইডঃ প্রত্যেকটা মানুষ ঘুরতে পছন্দ করে। পরিবার ও বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে বেড়াতে ভালবাসে। তার জন্য অনেক সময় নির্ভর করে একজন ট্যুর গাইডের উপর। কারন একজন ভালো ট্যুর গাইড ব্যক্তি আপনাকে সাবধানতার সাথে কম খরচে ভ্রমন করাতে পারবে। ফ্লাইট, ট্রেনের টিকিট বুকিং, হোটেল বুকিং থেকে শুরু করে সম্পূর্ণ প্লান করা পুরোটা দায়িত্ব একজন ট্যুর গাইডের ওপর।

অফিস, স্কুল বা কলেজের ট্যুর প্রোগ্রামের দায়িত্ব নিয়ে সঠিক ভাবে করতে পারলে নিয়মিত ব্যবসা পাওয়া সম্ভব। এটি কম খরচে লাভবান ব্যবসা। আপনাকে শুধু একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে আর যোগাযোগ করে খোঁজ নিতে হবে বিভিন্ন জায়গায় হোটেলের সঙ্গে, জেনে নিতে হবে তাদের এজেন্ট কমিশনের রেট কেমন। নতুন নতুন জায়গা খুজে বের করতে হবে। বর্তমান সময়ে সবথেকে লাভজনক ব্যবসার একটি হলো ট্যুর অপারেটিং ব্যবসা।

বিদেশী ভাষা শিখাঃ বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের অনেক মানুষ বৈদেশিক ভাষা শিখে বিদেশে যাচ্ছে। কেউ পড়াশোনার জন্য আবার কেউ কাজ করে বৈদেশিক অর্থ উপার্জনের জন্য। আপনার যদি এমন কোন বিদেশী ভাষা জানা থাকে, তাহলে সেই ভাষার দক্ষতা ব্যবহার করে সহজে লাভজনক ব্যবসা করতে পারবেন। ছোট থেকে বয়স্ক, বিভিন্ন বয়সের ছাত্র-ছাত্রী পাওয়া সম্ভব এই ব্যবসায়।

সল্প বিনিয়োগে আয় করতে পারবেন এই ব্যবসায়। তবে এই ব্যবসা করতে সংশ্লিষ্ট ভাষায় আপনার যথেষ্ট পরিমাণে দক্ষতা থাকতে হবে। আপনাকে নিশ্চিতভাবেই হতে হবে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী ও ধৈর্যশীল। বর্তমান সময়ে এই ভাষা শিক্ষার চাহিদা দিন দিন ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

দর্জির দোকানঃ মানুষ পরিবর্তনশীল। একটি বিষয় নিয়ে বেশীদিন আগ্রহ কাজ করেনা। মানুষের যেমন চাহিদার পরিবর্তন হয় ঠিক তেমনভাবে তার কাপড় পরিধানের বিষয়টিও পরিবর্তন হয়। একজন মানুষের সবসময়ই একই ধরেনের কাপড় পড়ার আগ্রহ থাকে না। তাই দৈনন্দিন জীবনে নিত্য নতুন পোশাকে ডিজাইন বানিয়ে পড়তে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে।

তবে এক্ষেত্রে আপনার অবশ্যই উপযুক্ত দক্ষতা ও সৃজনশীলতা থাকতে হবে। নিজের বাড়িতে থেকেও আপনি চাইলে এই ব্যবসা করতে পারেন। কাস্টমারদের বাড়িতে গিয়ে ডিজাইন এবং মাপ নিয়ে এসে নিজ বাড়িতে বসে বানিয়ে সময়মত পৌঁছে দিয়ে আসুন ক্রেতার বাড়িতে। অনলাইনে এমন অনেক নতুন নতুন অভিনব ডিজাইন পাওয়া যায়, সেখান থেকে পছন্দ করে নিয়ে নিজের ক্যাটালগ তৈরি করে ফেলতে পারেন।

অনুবাদের ব্যবসাঃ অল্প পুঁজিতে লাভজনক ব্যবসার মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে অনুবাদের ব্যবসা। এই ব্যবসাকে স্মার্ট বিজনেস প্ল্যানও বলা হয়ে থাকে। দিন দিন অনুবাদের চাহিদা বাড়ছে। জাতীয়তা সনদ, হলফনামা, দলিল, জীবন বৃত্তান্ত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রশংসা পত্র, জন্ম-মৃত্যু, টেন্ডার, প্রবন্ধ, প্রতিবেদন, চিঠিপত্র, ব্যবসায় চুক্তি, ট্যাক্স সংক্রান্ত কাগজপত্র ইত্যাদি সহ অনেক নথি বাংলা থেকে বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করে আয় করা যায়।

এছাড়া বিদেশি ভাষা জাপানিজ, চাইনিজ, স্প্যানিশ, ইংরেজি, ফরাসি, রাশিয়ান, বাংলা, হিন্দি, পর্তুগিজ প্রভৃতি ভাষা অনুবাদ করতে হয়। অনুবাদ কেন্দ্রের জন্য জনশক্তি মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশন থেকে উদ্যোক্তার নামে ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করতে হবে। এর সাথে অনুবাদ সংস্থার সনদপত্রসহ জামানত দিয়ে সংস্থার নামের জন্য জনশক্তি মন্ত্রণালয়ে আবেদন করতে হবে। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর আপনি আপনার অনুবাদ ব্যবসার কাজ শুরু করতে পারবেন।

ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টঃ বর্তমান সময়ে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ব্যবসা। এই ব্যবসা খুব অল্প পুঁজিতে শুরু করা যায় এবং অধিক লাভবান হওয়া সম্ভব। এর জন্য আপনার প্রয়োজন একটা আকর্ষণীয় ওয়েবসাইট এবং সকল শ্রেণীর মানুষের যোগাযোগ। সব শ্রেণীর মানুষের সাথে যোগাযোগ না থাকলে, এই ব্যবসা দাঁড় করানো সম্ভব নয়। এজন্য ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ব্যবসার গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হচ্ছে সবার সাথে যোগাযোগ স্থাপন করা।

মনে করেন একটি বিয়ে বাড়ির ভাড়া করা থেকে ডেকোরেশন, খাওয়া-দাওয়া থেকে বিয়ের কার্ড ছাপানো, কনের সাজ থেকে ফটোগ্রাফি, বিয়ের অনেক ধরনের কাজ থাকে। আজকের ছোট পরিবার বর্তমান ব্যস্ততার যুগে এইসব কাজ সুষ্ঠভাবে করার জন্য লোক কমে এসেছে। কিন্তু এই বিশেষ দিনটির জাঁকজমক নিয়ে আফসোস করতে চাইনা কেউ। আর এইজন্যই ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠানের চাহিদা বাড়ছে।

মোবাইল রিচার্জ এর দোকানঃ বর্তমান সময়ে অনলাইন রিচার্জের যুগেও বেশিরভাগ উপভোক্তায় এখনো স্থানীয় কাছের দোকানে গিয়ে মোবাইল রিচার্জ করতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। তাই পাড়ায় একটি ছোট দোকান ঘর ভাড়া করে কম খরচে এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন। সকল সিম নেটওয়ার্ক প্রোভাইডারদের সঙ্গে যোগাযোগ করে চুক্তিবদ্ধ হতে হবে এবং জেনে নিতে হবে তাদের কমিশন রেট।

বাজারে দোকান ঘর কিনতে গেলে অনেক টাকা প্রয়োজন হবে। কিন্তু দকান ঘর না কিনে যদি ভাড়া নেওয়া যায় তাহলে অল্প পুঁজিতে লাভজনক ভাবে ব্যবসা করা সম্ভব। মোবাইল রিচার্জের পাশাপাশি টাকা পাঠানো ও উত্তোলন এর কাজও করতে পারেন। তাহলে খুব অল্প সময়ের মধ্যে লাভবান হওয়া সম্ভব।

১০ হাজার টাকায় ৫টি ইউনিক ব্যবসার লাভজনক আইডিয়া

১০ হাজার টাকায় ৫টি ইউনিক ব্যবসার লাভজনক আইডিয়া আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। এই ইউনিক আইডিয়ার মধ্যে আপনার পছন্দের আইডিয়া নিয়ে আপনি কাজ করতে পারেন। ব্যবসা শুরু করার জন্য একজন ব্যক্তির মধ্যে সৃজনশীল চিন্তা করতে পারার ক্ষমতা এবং কঠোর পরিশ্রম করার দক্ষতা থাকা জরুরী। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক এমন কিছু ইউনিক ব্যবসার আইডিয়া, যা আপনি শুরু করতে পারবেন ১০ হাজার টাকার মধ্যে।

ফুলের দোকানঃ আমাদের এই দেশে সাধারণত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বিশেষ করে পহেলা বৈশাখ, পূজা, ভালোবাসা দিবস, নববর্ষ, একুশে ফেব্রুয়ারি, বিজয় দিবস সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ফুলের ব্যবহার ব্যাপক হারে হয়ে থাকে। পরিবারের নানান অনুষ্ঠানে ফুলের ব্যবহার করা হয়। এইসব উৎসব ছাড়াও সারা বছর বিভিন্ন প্রয়োজনে বিশেষ করে বিয়ের উৎসব ও অন্যান্য প্রয়োজনে মানুষ ফুল ব্যবহার করে থাকে।

ফুলের মালা হিসাবে, তোড়া হিসেবে, বুকেট বা বিভিন্ন মোড়কে বিক্রি করা হয়। বিভিন্ন মৌসুমে বাংলাদেশে ফুলের চাহিদা বেড়ে যায়। বিশেষ করে দিবস বা বিভিন্ন অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে আপনি খুব অল্প পুঁজিতে লাভজনক ব্যবসা হিসাবে ছোট আকারে ফুলের দোকান দিতে পারেন। এমনকি যারা ফুল চাষ করে এমন ব্যক্তিদের সাথে যোগাযোগ করলে পাইকারি দামে ফুল আপনার দোকানে দিয়ে যাবে।

আপনাকে যেটা করতে হবে ফুল গুলোকে মালা বানিয়ে বুকেট বা প্যাকেট আকারে সাজিয়ে বিক্রি করতে হবে। আপনার আশে পাশের সবার সাথে যোগাযোগ রাখতে হবে যেন ফুলের প্রয়োজন হলে আপনার দোকান থেকে নিতে পারে। ধৈর্য সহকারে কাজ করলে খুব অল্প সময়ের মধ্যে আপনি ব্যবসায় লাভবান হতে পারবেন।

ছোট বাচ্চাদের জন্য হোমমেড খাবারঃ বর্তমান সময়ে ছোট বাচ্চাদের স্কুলে ক্লাস করার জন্য দিনের অনেকটা সময় থাকা লাগে। যার জন্য তাদের প্রায় বাইরের খাবার খেতে হয়। প্রতিদিন বাইরের খাবার খাওয়ার ফলে বাচ্চারা অসুস্থ হয়ে পড়ে। যেটা একজন বাচ্চার জন্য খুবই ক্ষতিকর। আপনার যদি রান্নার বা খাবার তৈরির দক্ষতা থাকে তাহলে এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

এই ব্যবসা করার জন্য পুষ্টিকর ও সুস্বাস্থ্য খাবার বানিয়ে টিফিনে করে বাচ্চাদের স্কুলে সরবরাহ করতে পারেন। বাচ্চাদের স্কুলের পাশাপাশি যেই সব মানুষ কর্মক্ষেত্রে কাজ করে তাদের অফিসেও সরবরাহ করতে পারেন। বর্তমানে স্বাস্থ্যগত বিষয় বিবেচনায় অনেকেই হ্যান্ডমেড বা হোমমেড খাবার পছন্দ করে থাকে। এ ধরনের চাহিদা দিন দিন ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

পুষ্টিকর দুধ সরবরাহ করাঃ যাদের গরুর খামার আছে, তাদের সাথে কথা বলে খাঁটি পুষ্টিকর দুধ সংগ্রহ করে বিভিন্ন দোকানে সরবরাহ করা। সল্প পুঁজি থাকলে এই ব্যবসা শুরু করা সম্ভব। দোকানে দেওয়ার পাশাপাশি বাসা বাড়িতেও কাস্টোমার বাড়ানোর জন্য সরবরাহ করতে পারেন। এতে করে আপনার ব্যাসার পরিধি খুব তাড়াতাড়ি বৃদ্ধি পাবে।

আপনি হোমমেইড দুধ বা দুধ জাত পণ্য তৈরি করে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করতে পারেন। এটি যেমন খামার মালিকের সাহায্য হচ্ছে ওপর দিকে যেই সব মানুষ দুধ বা দুধ জাত পণ্য ক্রয় করার ফলে পুষ্টিকর খাবার পাচ্ছে। এই ব্যবসা অল্প পুঁজিতে লাভবান হওয়ার পাশাপাশি মানুষের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য কাজ করবে।

চায়ের দোকানঃ প্রতিদিন সকলের নাস্তা থেকে শুরু করে রাতের খাবার পরে মানুষ চা খেতে পছন্দ। প্রতিদিন এর আড্ডায় সকালে অথবা বিকেলে এক কাপ চা না হলে চলে না। ছোট-বড়, ধনী-গরিব, শ্রমিক থেকে শুরু করে সব শ্রেণীর মানুষের প্রতিদিন চায়ের দোকানে ভিড় দেখা যায়। আর এইজন্যই  বাংলাদেশের চায়ের দোকানের ব্যবসা লাভজনক ব্যবসা। এই ব্যবসা অল্প পুঁজিতে শুরু করা যায়।

শুধুমাত্র চা, চিনি এবং কিছু সামান্য জিনিস নিয়ে এই ব্যবসা শুরু করা সম্ভব। তবে এই ব্যবসায় অধিক লাভবান হওয়ার জন্য দরকার শুধু একটু ভিন্নমাত্রা ও ইউনিক আইডিয়া। যেমন সাধারণ দোকান গুলোতে দুধ চা ও লাল চা বিক্রি করে। কিন্তু আপনি যদি তেজপাতা চা, লেমনটি, পুদিনা পাতার চা, কালোজিরা চা, মশলা চা, খাঁটি গরুর দুধের চা সহ বিভিন্ন ধরনের চা বিক্রি করলে আপনার লাভ বেশি হবে।

ফুড ট্রাকঃ আপনি যদি কুকিং ভালবাসেন আর কুকিং এর বিষয়ে আপনার পরিপূর্ণ জ্ঞান থাকে এবং আপনি নিজেই ফুড ট্রাক চালাতে পারেন, তাহলে আপনি এই ব্যবসাটি করতে পারেন। এটি অনেকটা অনুষ্ঠানিক রেস্তোরাঁর মতো অপর্যাপ্ত মূল্যে শুরু করার সুযোগ দেই। ফুড ট্রাক ইচ্ছা মতো ব্যবসার স্থান পরিবর্তন করতে পারে। যাতে করে আপনি অধিক প্রচার এবং ক্রেতাদের প্রয়োজনীয় খাবার সরবরাহ করতে পারে।

অনেক বড় ও ছোট উভয় শহরেই এখন ফুড ট্রাক রয়েছে। তাই এই বিষয়ে আইন ও বিধান রয়েছে যা অনুসরণ করা উচিত। আপনি কোথায় ব্যবসা করতে পারবেন, এতে অন্তর্ভুক্ত থাকবে। আপনাকে এই ব্যবসা শুরু করার আগে বিভিন্ন খাবারের মেনু সম্পর্কে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। নিয়ম মেনে এই বুবসা শুরু করলে অল্প পুঁজিতে লাভজনক ব্যবসা করতে পারবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ট্রেড রেইনবোর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url