অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে অর্থ উপার্জনের সেরা উপায়
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হলো এমন এক ধরনের কর্ম-দক্ষতা ভিত্তিক মার্কেটিং প্রক্রিয়া যেখানে এক বা একাধিক মার্কেটাররা একটি নির্দিষ্ট ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত হয়ে ঐ প্রতিষ্ঠানে গ্রাহক আনার জন্য তাদের মার্কেটিং দক্ষতা প্রয়োগ করে থাকে এবং গ্রাহক আনার পর উক্ত ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান পুরস্কার স্বরূপ মার্কেটারদের কিছু অর্থ প্রদান করে থাকে।
বর্তমানে ডিজিটাল বিশ্বে সবকিছুই অনলাইন ভিত্তিক। যেকোনো ব্র্যান্ড তাদের প্রচার প্রচারণার জন্য এখন অনলাইন মার্কেটিং কে খুবই গুরুত্ত সহকারে ব্যবহার করছে। ডিজিটাল বিশ্বে জনপ্রিয় অনলাইন প্লাটফর্ম হলো অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। আপনি যদি অনলাইনে ইনকাম করতে আগ্রহী বা প্যাসিভ ইনকাম করতে চান তাহলে আপনার জন্য সঠিক প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং।
পেজ সুচিপত্রঃ অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে অর্থ উপার্জনের সেরা উপায়
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করবো কিভাবে
- মার্কেটিং করার জন্য বিষয় সিলেকশন
- বিশ্বস্ত অ্যাফিলিয়েট প্ল্যাটফর্ম
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এ কমিশন কতো পারসেন্ট পাওয়া যায়
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে কাজ করে
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করবেন কিভাবে
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর সুবিধা
- আপনার কন্টেন্ট মার্কেটিং করতে হবে
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এ ভালো করার জন্য কিছু টিপস
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর ভবিষ্যৎ কেমন
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হলো অনলাইন প্লাটফর্মের ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি অংশ।
কোনো প্রতিষ্ঠান তার উৎপাদিত পণ্য বা সেবার প্রচার এবং বিক্রয়ের জন্য ছোট
বড় বিভিন্ন অনলাইন মার্কেটারদের কাছ থেকে সাহায্য নিয়ে থাকে, যারা এই সাহায্য
করে থাকে তাদেরকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার বলে। এবং তারা অনলাইন ভিত্তিক যেই
মাধ্যমে সাহায্য করে থাকে সেই মাধ্যমকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বলে।
যখন কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তাদের ব্যবসায় বৃদ্ধির জন্য অ্যাফিলিয়েট
প্রোগ্রাম চালু করে এবং মার্কেট প্লেসে তাদের প্রোডাক্ট প্রচার করার জন্য বিভিন্ন
ব্লগারস বা ইউটিউবারদের ব্যবহার করে এবং বিনিময়ে তাদেরকে একটি কমিশন প্রদান করে
এটি হচ্ছে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। এটি একটি কর্মক্ষমতা ভিত্তিক মার্কেটিং
কৌশল যা সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করবো কিভাবে
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করবো কিভাবে এই বিষয়ে পরিপূর্ণ জ্ঞান অর্জন করলে
সহজেই আপনি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার হিসাবে ক্যারিয়ার গঠন করতে
পারবেন। বর্তমান সময়ে অর্থ উপার্জনের জন্য নতুন নতুন পথ উন্মোচিত হচ্ছে। আর
ইন্টারনেট তার মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।অনলাইনে ঘরে বসে আজকাল
যে কেউ অর্থ উপার্জন করতে চাই, আর এমনই এক জনপ্রিয় মাধ্যম হল অ্যাফিলিয়েট
মার্কেটিং।
একটি মানুষের জন্য অতিরিক্ত আয়ের সুযোগ খুঁজে বের করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি
বিষয়। বর্তমান সময়ে ইন্টারনেট সেই অসীম সম্ভাবনার দরজা খুলে দিয়েছে আমাদের
সামনে। যেখানে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মত ধারণাগুলো আমাদের আয়ের নতুন
দিগন্ত উন্মোচন করেছে। তাহলে চলুন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর জগতে
আপনার ক্যারিয়ার যাত্রা শুরু করার পূর্বে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করবো
কিভাবে এ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই-
মার্কেটিং করার জন্য বিষয় সিলেকশন
মার্কেটিং করার জন্য বিষয় সিলেকশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপ কেননা
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এ সফল হতে হলে আপনার অবশ্যই এমন একটি বিষয় নির্বাচন করতে
হবে যার প্রতি আপনার আন্তরিক আগ্রহ রয়েছে। কুকিং, ফিটনেস, বিউটি অ্যান্ড
ফ্যাশন, শিক্ষা, ফ্যাশন, টেকনোলজি, ফুড ব্লগ, ভিডিও গেম, লাইফ স্টাইল, হোম
ইমপ্রুভমেন্ট ইত্যাদি এমন অনেক বিষয় রয়েছে যেগুলোর উপর আপনি অ্যাফিলিয়েট
মার্কেটিং করতে পারবেন।
তবে সবচেয়ে ভালো হবে আপনার জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ রেখে একটি
বিষয় নির্বাচন করা, কারণ যখন আপনার কোন বিষয় সম্পর্কে আগ্রহ থাকবে তখন আপনি সে
বিষয়ে কোয়ালিটি পূর্ণ কনটেন্ট তৈরি করতে পারবেন আর তখন আপনার জন্য অ্যাফিলিয়েট
মার্কেটিং করা খুবই সহজ হয়ে যাবে। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এ বিষয়
সিলেকশনে যেসব তথ্য জানা দরকার-
-
প্রথমে আপনার এমন একটি বিষয় খুঁজে বের করতে হবে যার প্রতি আপনার আগ্রহ
রয়েছে।
-
নির্বাচিত বিষয় অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এ লাভজনক হবে কিনা, তা যাচাই করতে
হবে।
-
বিষয় সিলেকশন হয়ে যাবার পর আপনার টার্গেট অডিয়েন্স কারা সেটি রিসার্চ করতে
হবে।
-
বর্তমানে উক্ত বিষয়ে কেমন প্রতিযোগিতা রয়েছে, তা জানা অত্যন্ত জরুরী।
-
যেসব বিষয় বর্তমান সময়ে ট্রেন্ডিংয়ে রয়েছে সেই বিষয়গুলোর দিকে নজর দিতে
হবে।
- নির্বাচিত বিষয়ের প্রোডাক্ট মানুষ কিনবে কিনা তা যাচাই করতে হবে।
একটি কথা সব সময় মনে রাখবেন, ব্লগিং হোক কিংবা অ্যাফিলিয়েট
মার্কেটিং সবক্ষেত্রে বিষয় সিলেকশন করার কাজটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ সহকারে
করতে হবে। কারণ আপনি যদি বিষয় সিলেকশনে ভুল করেন তাহলে আপনি সেই সেক্টরে
ব্যর্থতা ছাড়া আর কিছুই পাবেন না। তাই একজন দক্ষ অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার
হতে হলে বিষয় সিলেকশন অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ সহকারে করতে হবে।
বিশ্বস্ত অ্যাফিলিয়েট প্ল্যাটফর্ম
বিশ্বস্ত অ্যাফিলিয়েট প্ল্যাটফর্ম আপনি তখনই করতে পারবেন যখন আপনি অ্যাফিলিয়েট
মার্কেটিং এর জন্য আপনার একটি নিদিষ্ট বিষয় নির্বাচন হয়ে থাকবে। আপনার
নির্বাচিত বিষয়ের সাথে মিল রেখে এমন বিশ্বস্ত অ্যাফিলিয়েট
প্ল্যাটফর্ম খুঁজে বের করতে হবে যার সাথে আপনার বিষয়ের সম্পৃক্ত রয়েছে।
কেননা প্ল্যাটফর্মের সাথে বিষয়ের মিল না থাকলে অডিয়েন্স ধরে রাখা সম্ভব নয়।
যখন আপনি কোন অ্যাফিলিয়েট প্ল্যাটফর্ম নির্বাচন করবেন তখন আপনাকে আরও কিছু
বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। যেমন প্রতিটা প্রোডাক্ট সেল করার বিনিময়ে কত
পারসেন্ট কমিশন দিবে, তারা সততার সাথে পেমেন্ট করে কিনা, তাদের সাথে অ্যাফিলিয়েট
মার্কেটিং করে নিজের ক্যারিয়ার গড়া যাবে কিনা ইত্যাদি বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এ কমিশন কতো পারসেন্ট পাওয়া যায়
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এ কমিশন কতো পারসেন্ট পাওয়া যায় সেটা নির্ভর
করে মার্কেটিং কৃত প্রোডাক্ট এর মূল্যের উপর। এই কমিশন সাধারনত ৫% থেকে ৭০%
পর্যন্ত পাওয়া যায়। মূলত এটার কোনো লিমিট নেই, যে যতোটুকু কাজ করতে পারবে
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে সে ঠিক তেমনই ইনকাম করতে পারবে। তবে দেশীয়
অ্যাফিলিয়েট কোম্পানির প্রোডাক্ট এর চেয়ে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফিলিয়েট
কোম্পানির প্রোডাক্ট সার্ভিস দিয়ে মার্কেটিং করলে ইনকাম বেশি হবে।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে ইনকামের পরিমাণ বিভিন্ন কারনে পরিবর্তনশীল হতে
পারে। আমন্ত্রণকারী ওয়েবসাইট এবং প্রোডাক্ট এর মান, বিজ্ঞাপনের
প্রভাবশীলতা, ট্রাফিকের(কাস্টমার) পরিমাণ, ওয়েবসাইটের বিজ্ঞাপনের অনুমোদিত
পরিমাণ এবং বিক্রিত প্রোডাক্ট এর মুনাফা ইত্যাদি এই ইনকাম পরিমাপের গুরুত্বপূর্ণ
উপায়।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে কাজ করে
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে কাজ করে সেটা জানা খুবই জরুরী। মার্কেটিং এ কিভাবে
কাজ করতে হবে যদি জানা না থাকে তাহলে ইনকাম আশানুরূপ হবে না। যেসব সংস্থা
অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম পরিচালনা করে সেসব সংস্থা আপনাকে একটি লিংক দিবেন তারপর
আপনি চাইলে সেই লিংক টিকে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে প্রচার করতে পারেন। যেই
লিংকটি আপনি প্রচার করেছেন যদি কোন ব্যক্তি সেই লিংক ব্যবহার করে কিছু ক্রয় করে
তাহলে আপনি সেখান থেকে কিছু কমিশন পাবেন আর সেটা হলো অ্যাফিলিয়েট কমিশন। তবে কত
টাকা পাবেন সেটা নির্ভর করে পণ্যের কমিশন মূল্যের উপর।
অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম
কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তার পণ্য বা সেবা প্রচার করার জন্য মার্কেটারদের
সাহায্য নেয় এবং "অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম" এর দ্বারা বিক্রি বিক্রি বৃদ্ধির
বিনিময়ে সাহায্যকারীকে একটি কমিশন দেয় তখন সেটাকে অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম বলে।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটপ্লেস
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করার জন্য আবেদনকারী ব্যক্তিরা যেখানে তার
সহযোগী মার্কেটারদের অংশীদারী প্রোগ্রাম এর অধীনে পণ্য বা সেবা বিক্রি করার জন্য
তালিকাভুক্ত হন তাকেই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটপ্লেস বলে। এখানে আবেদনকারী ব্যক্তিরা
তাদের পণ্য বা সেবা যেগুলো তারা প্রচার করতে চায় সেগুলো তালিকাভুক্ত করে থাকে।
অ্যাফিলিয়েট আইডি
মার্কেটিং শুরু করার জন্য আপনাকে অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম পরিচালনা করে এমন কোন
কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করতে হবে, তখন কোম্পানি থেকে আপনাকে একটি ফর্ম দেওয়া হবে
এবং সেটি পূরণ করে জমা দেওয়ার পর আপনাকে একটি ইউনিক আইডি দিবে, যেটি
অ্যাফিলিয়েট আইডি নামে পরিচিত।
অ্যাফিলিয়েট লিংক
অ্যাফিলিয়েট কোম্পানিতে জয়েন হওয়ার পর ইউনিক আইডি পাওয়ার পরে প্রতিটি পণ্য বা
সেবা বিক্রির জন্য আপনাকে একটি লিংক তৈরি করতে হবে যেটি এফিলিয়েট লিংক নামে
পরিচিত। আপনি আপনার অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানিতে লগইন করলে সহজেই প্রতিটি
পণ্য বা সেবার জন্য একটি অন্তর্ভুক্ত লিংক তৈরি করতে পারবেন।
অ্যাফিলিয়েট কমিশন
অ্যাফিলিয়েট লিংক ব্যবহার করে যে কোম্পানির পণ্য বা সেবা বিক্রি করবেন তখন সেই
কোম্পানি সেটা আপনার অ্যাফিলিয়েট লিংকের মাধ্যমে জানতে পারবেন যে কোন পণ্য বা
সেবা কতজন ব্যক্তির কাছে বিক্রি করা হয়েছে। তারপর কোম্পানি পণ্যের কমিশনের উপর
ভিত্তি করে আপনার অ্যাফিলিয়েট একাউন্টে সেই কমিশন জমা করে দিবেন।
পেমেন্ট
উপরের আলোচিত সমস্ত ধাপ গুলি সম্পূর্ণ হওয়ার পরে একজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার
তার আয় করা কমিশন পেপাল একাউন্ট অথবা সরাসরি নিজের সেভিংস একাউন্টে ট্রান্সফার
করে নিতে পারবেন।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করবেন কিভাবে
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করার জন্য অবশ্যই আপনার একটি অনলাইন প্লাটফর্ম
থাকতে হবে। তা হতে পারে আপনার ব্লগ ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল, ফেসবুকসহ অন্যান্য
সোশ্যাল মিডিয়া পেইজ। তবে আপনার প্ল্যাটফর্মে প্রচুর পরিমাণে ফলোয়ার, ভিজিটর বা
সাবস্ক্রাইবার থাকতে হবে কারণ পণ্য বা সেবার মার্কেটিং করার জন্য সবচেয়ে জরুরি
হলো অডিয়েন্স বা ট্রাফিক, যাদের কাছে আপনি পণ্য বা সেবা শেয়ার বা মার্কেটিং
করবেন।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর সুবিধা
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর সুবিধা হল খুব সহজেই শুরু করা যায়। একজন
মার্কেটের মার্কেটিং করে সাধারণত ইনকাম এর জন্য। আপনি যদি সঠিকভাবে অ্যাফিলিয়েট
স্কিল শিখতে পারেন এই মার্কেটপ্লেসে অনেক সুযোগ রয়েছে। এটা এতটাও সহজ না, যে কেউ
চাইলেই এটা করতে পারবে। হাজার হাজার মার্কেটার আছে যারা সফল হয়নি।
অনেক কৌশল শিখতে পারবেন আপনি অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম থেকে।
আপনি কোন এরিয়াতে কাজ করবেন সেটা আগে ঠিক করে নিতে হবে। আপনার এরিয়ার
অডিয়েন্স কোন ধরনের প্রোডাক্টের চাহিদা বেশি এবং আপনার এই বিষয়ে জ্ঞান ও
ইন্টারেস্ট থাকতে হবে। এরপরে আপনি কোন মিডিয়াতে অ্যাফিলিয়েট করবেন তা
সিলেক্ট করে নিতে হবে। যেমনঃ ইউটিউব, ফেসবুক পেইজ বা ব্লগ ওয়েবসাইট।
প্যাসিভ ইনকাম করার অন্যতম সেরা ও জনপ্রিয় মাধ্যম হল অ্যাফিলিয়েট
মার্কেটিং। এখানে একটি ওয়েবসাইট বা ইউটিউব চ্যানেল বা ফেসবুক পেজের মাধ্যমে
প্যাসিভ ইনকামের একটি কার্যকরী পথ তৈরি হয়। যেহেতু এফিলিয়েট মার্কেটিং এ অন্য
প্রতিষ্ঠানের পণ্য বিক্রি করতে হয়, সেহেতু পন্য তৈরি বা খারাপ হওয়ার ভয় থাকে
না। অর্থাৎ অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য আপনাকে কোন পণ্য উৎপাদন করতে
হবে না এতে যেমন উৎপাদন খরচ বহন করতে হবে না তেমনি বিপণন খরচও দিতে হবে না।
আপনার কন্টেন্ট মার্কেটিং করতে হবে
আপনার কন্টেন্ট মার্কেটিং করতে হবে যখন আপনি কোনো প্রতিষ্ঠানের অ্যাফিলিয়েট
প্রোগ্রামে যুক্ত হবেন। কারণ মার্কেটিং করার মাধ্যমে আপনি যত বেশি
অডিয়েন্সকে টার্গেট করতে পারবেন আপনার সেল ততো বেশি বৃদ্ধি পাবে পাওয়া সম্ভাবনা
বেড়ে যাবে। এই মার্কেটিং এর কাজটি আপনি দুই ভাবে করতে পারেন। যেমনঃ ফ্রি
মার্কেটিং এবং পেইড মার্কেটিং।
যদি আপনি ফ্রি মার্কেটিং করতে চান তাহলে আপনাকে কোন প্রকার অর্থ ব্যয় না করে SEO
করতে হবে। কারণ SEO করার মাধ্যমে বিনামূল্যে টার্গেট করা অডিয়েন্স এর কাছে
পৌঁছানো সম্ভব।
কিন্তু যদি পেইড মার্কেটিং করতে চান তাহলে আপনাকে অর্থ ব্যয় করে মার্কেটিং
প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। কিন্তু আপনি যে ধরনের মার্কেটিং করেন না কেন, যদি
আপনি সঠিকভাবে সকল প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতেন না পারেন তাহলে আপনার সময় ও শ্রম
সব বৃথা যাবে।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এ ভালো করার জন্য কিছু টিপস
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এ ভালো করার জন্য আপনাকে অবশ্যই কিছু টিপস অনুসরণ করতে
হবে।
ভালো প্রোডাক্ট বেছে নিতে হবে
ভালো প্রোডাক্ট সেই গুলোকেই বলা হয় যেখান থেকে আপনি কমিশন বেশি পাবেন এবং
কম্পিটিশন কম হবে। মনে করেন আপনি একটা প্রোডাক্ট পছন্দ করলেন যার মূল্য ৫০০
টাকা এবং এটি সেল করতে পারলে আপনাকে ১০% কমিশন দেওয়া হবে, সে ক্ষেত্রে
প্রোডাক্টটি একবার সেল হলে আপনি পাবেন ৫০ টাকা। অন্য আরেকটি প্রোডাক্ট
রয়েছে যার দাম ৫০,০০০ টাকা এবং আপনি এটা ১০% কমিশনে সেল করলে পাবেন ৫,০০০
টাকা।
তাহলে একটা প্রোডাক্ট একবার সেল করলে পাচ্ছেন ৫০ টাকা, আর অন্য প্রোডাক্টটি সেল
করলে পাচ্ছেন ৫,০০০ টাকা। তাহলে এখন ভেবে বলুন কোনটি আপনার জন্য সুবিধাজনক। তবে
সুধু দাম এর দিকে তাকালে হবে নাহ। আপনাকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যেন
আপনার কম্পিটিশন কম থাকে। অর্থাৎ আপনি ৫০,০০০ টাকার প্রোডাক্ট পছন্দ করলেন
কিন্তু এটার দাম অনেক বেশি। আবার এত দাম দিয়ে খুব কম মানুষই সেই প্রোডাক্টটি
কিনবে। সুতারাং আপনাকে প্রোডাক্ট খুব ভালো ভাবে বেছে নিতে হবে।
সঠিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচন
অনেকে অনেক সময় সঠিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করতে ভুল করে। অর্থাৎ আপনি এমন কোন
প্রতিষ্ঠানের জন্য অ্যাফিলিয়েট করলেন যেখানে অ্যাফিলিয়েট করে আপনি খুব
একটা বেশি লাভবান হলেন না। হয়তো কমিশন অনেক কম অথবা তারা ঠিকমতো পেমেন্ট করে না
বা অন্য যে কোন সমস্যা হতে পারে। সুতরাং আপনাকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে ভালো
করার জন্য অবশ্যই ভালো একটি প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করতে হবে। যেখান থেকে আপনি ভালো
কমিশন পাবেন এবং নিয়মিত পেমেন্ট নিতে পারবেন।
SEO শেখা
আপনি ইউটিউবে ভিডিও বানান অথবা ফেসবুকে অথবা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আপনি আপনার ব্লগ
পোস্ট তৈরি করেন না কেন যে কোন পর্যায়ে SEO বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন আপনাকে
অবশ্যই শিখতে হবে। হ্যাঁ আপনি চাইলে একজন এক্সপার্ট কে হায়ার করতে পারেন, তবে
আপনার নিজের এসিও শেখাটাও জরুরী। কেননা আপনি নিজে যখন জানবেন তখন অনেক কিছু খুব
সহজেই করতে পারবেন। এসিও এর মাধ্যমে মূলত আপনার ভিডিওটাকে ইউটিউব সার্চ বক্সের
প্রথম দিকে এনে দিবে অথবা গুগল সার্চ রেজাল্ট এর প্রথমে নিয়ে আসবে সুতরাং এসিও
শেখাটা অনেক বড় একটি ব্যাপার।
মার্কেটিং এ দক্ষতা
যাদি আপনার মার্কেটিং এর দক্ষতা না থেকে থাকে, এমন যদি হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে
আপনাকে মার্কেটিং নিয়ে টুকটাক রিসার্চ করতে হবে। কেননা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
মূলত মার্কেটিং এর মতোই। মার্কেটিং সবসময় একই নিয়ম মেনে চলে না, অনেক সময় অনেক
কিছু চিন্তা করে সেভাবে কাজ করতে হয়। সুতরাং মার্কেটিং নিয়ে খুব জ্ঞান কম থেকে
থাকলে সেক্ষেত্রে আপনি সমস্যাই পড়তে পারেন।
নিয়মিত কাজ করা
অনেকেই আছে যারা কিছুদিন কাজ শুরু করে পরে বন্ধ করে দেন। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
এর অসুবিধার মধ্যে হচ্ছে আপনার সময় একটু বেশি লাগতে পারে। কিছু সময় নিয়ে একটি
ওয়েবসাইট দাঁড় করানোর পর ওয়েবসাইটে ভিজিটরস আসছে না বলে তিনি কাজ করা বন্ধ করে
দিয়েছেন। কেননা সে হয়তো আর কিছুটা সময় নিয়ে কষ্ট করলেই এই ওয়েবসাইট থেকে বেশ
ভালো রিটার্ন পেয়ে যেতো। আপনাকে অবশ্যই আগে থেকেই ভালো ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে
তারপরে এই সেক্টরে আসতে হবে এবং আপনি যদি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য কাজ
শুরু করেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে শেষ পর্যন্ত ধৈর্য ধরে রাখতে হবে।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর ভবিষ্যৎ কেমন
দেখুন এই ওয়ার্ল্ডের সবাই চায় তাদের প্রোডাক্ট বা সার্ভিস সেল হোক আর
অ্যাফিলিয়েট এর মাধ্যমে কোম্পানির যেহেতু কোনো প্রকার লস হয় না বরং সেই
কোম্পানি আরো অনেক বেশি কাস্টমার পায় সুতরাং বলা যায় অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
দীর্ঘদিন মার্কেটে টিকে থাকবে।
শেষ কথা
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি এবং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য কোন কোন
বিষয়গুলো জানা প্রয়োজন তা ইতিমধ্যেই উপরে বিস্তারিত ভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। তাই
আপনি যদি এই আর্টিকেলের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন
তাহলে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে অর্থ উপার্জনের সেরা উপায় গুলো সম্পর্কে
ভালো ভাবে জানতে পেরেছেন।
তথ্যবহুল এবং গুরুত্বপূর্ণ এই আর্টিকেলটি আশা করি আপনার অনেক ভালো লেগেছে। যদি এই
আর্টিকেলটি আপনার কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার পরিচিত মানুষের কাছে শেয়ার
করবেন। এতে করে অন্যরাও অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে অর্থ উপজেলা সেরা উপায়
সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবে।
ট্রেড রেইনবোর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url